ঝুমুর আক্তারের অভিনব কায়দায় প্রতারণা হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা | আপন নিউজ

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১২:০১ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
আমতলীতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থীকে দশ হাজার টাকা অর্থদন্ড আমতলীতে চাঁদা না দিলে বিধরা নারীকে প্রাণ নাশের হুমকি; সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ কলাপাড়ায় মুরগীসহ পালনের উপকরণ দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে উধাও প্রতারক সংস্থা আমতলী সরকারী কলেজের সামনের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ দাবীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কলাপাড়ায় স্ত্রী কর্তৃক প্রবাসী স্বামীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ কলাপাড়ায় পূর্ব শত্রুতা বসত ফের ব্যবসায়ীর বাড়িতে চু’রি; ৮ লক্ষ টাকার মালামাল লু’ট কলাপাড়ায় শিক্ষককে মারধর, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও সমাবেশ গলাচিপায় কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির উদ্বোধন কলাপাড়ায় আইপিএম পদ্ধতিতে চিনা বাদাম উৎপাদন শীর্ষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় জমি জমা বিরোধ; এক নারীকে পি’টি’য়ে জ’খ’ম
ঝুমুর আক্তারের অভিনব কায়দায় প্রতারণা হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা

ঝুমুর আক্তারের অভিনব কায়দায় প্রতারণা হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা

মোঃ নাসির উদ্দিন হাওলাদার, গলাচিপাঃ গলাচিপা উপজেলার ঝুমুর আক্তার অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ঝুমুর আক্তার (৩৫) হচ্ছেন আমখোলা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মো. দেলোয়ার হাওলাদারের কন্যা। তার বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ঝুমুর আক্তারের দ্বিতীয় স্বামী সেলিম মল্লিক গত ১৮ আগস্ট ঝুমুর আক্তারের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাবারে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।




অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঝুমুর আক্তার দীর্ঘদিন যাবৎ দ্বৈত পরিচয়পত্র এবং ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক বাবার নাম ঠিক রেখে ভিন্ন নামে দুইটি নাগরিক সনদ গ্রহণ করে বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে লাখ লাখ টাকা, সোনা গহনা হাতিয়ে নিচ্ছে সহজ সরল মানুষদের কাছ থেকে। একাধিক পুরুষের সাথে বিবাহের কথা বলে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে সর্বশান্ত করে লাপাত্তা হয়ে যায় এই ঝুমুর আক্তার। তাছাড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসের সীলমোহর এবং ১২/০৮/২০২১ সনের জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদনে দেখা যায় ঝুমুর আক্তার নাম পরিবর্তন করে আছিয়া বেগম উল্লেখ করেছেন। তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৮৬৬৬৪১৬৪৫১, জন্ম তারিখ ১০/১০/১৯৮৫, স্বামীর নাম মানিক, বাবার নাম মোঃ দেলোয়ার হোসেন এবং মায়ের নাম রসনেছা। অপরদিকে মে ২০১৯ প্রদত্ত জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট কার্ড) এ দেখা যায় তার জন্ম তারিখ ১৫/০৫/১৯৯৬, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৭৭৭২৫০০৮০২, বাবার নাম মোঃ দেলোয়ার হাওলাদার এবং মায়ের নাম রওশন আরা। ভিন্ন ভিন্ন নামের কারণে দীর্ঘ দিন যাবত সুকৌশলে প্রতারণা করে আসছে। অনুসন্ধানে আরো জানা যায় প্রতারক ঝুমুর আক্তার ভোকেশনাল থেকে পাশ করা ঢাকার সোনারগাঁও ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (টেক্সাটাইল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং) থেকে বিএসএস পাশ করে। অধ্যায়নরত অবস্থায় তার সহপাঠী পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলার স্বরগ্রামের মো. দুলাল ফকির এর পুত্র সোহান (২৫) এর সাথে প্রেম এবং বিবাহ বহির্ভ‚ত সম্পর্ক গড়ে এবং ঢাকায় একসাথে বসবাস করে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য চালাচ্ছে। সোহান ঝুমুর আক্তারকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে গত ১০/০৯/২০১৮ তারিখে বেলা ৩ টার সময় ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের সামনে থাপ্পড় মারে। এ বিষটি উভয় পক্ষের মধ্যে মীমাংসা হলেও তিন মাস পর সোহান গত ০৬/১২/২০১৮ তারিখে ঢাকায় আত্মহত্যা করলে ঝুমুর পরের দিন ০৭/১২/২০১৮ তারিখে ঢাকার বনানী থানায় সোহানের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী করে (যার ডায়েরী নম্বর ৪২২)।

সোহানের মা সুরাইয়া বেগম (৪০) এর কাছে মুঠোফোন ০১৭৩৫১৩৩৩৭৫ নম্বরে জানতে চাইলে তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে প্রতিবেদককে বলেন, ঝুমুরের জন্য আমার ছেলে পাগল ছিল। আমি ওদের সম্পর্কের বিষয়টি জানতাম। সোহানের আত্মহত্যার পর পুলিশ সোহানের হাতের লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করে। যাতে লেখা ছিল “আত্মহত্যা মহা পাপ, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমার মৃত্যুর খবর ঝুমুরের কাছে পৌঁছে দিও।” যা পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলার আতাইকুলা থানা পুলিশের কাছে রক্ষিত আছে বলে সোহানের মা জানান। অভিযোগকারী ঝুমুর আক্তারের দ্বিতীয় স্বামী সেলিম মলি­ক জানায় ঝুমুরের প্রতারণার বিষয়টি তার জানা ছিল না। তিনি গত ৯ জুলাই ২০২০ নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এবং ১১ জুলাই ২০২০ শরীয়ত সম্মতভাবে ঝুমুর আক্তারকে বিবাহ করেন। ঝুমুর আমার সরলাতার সুযোগ নিয়ে বাড়ীতে মাছের ঘের, পাকা দালানের কথা বলে নগদ ১৫ লাখ টাকা নিয়ে এখন নিখোজ রয়েছে।

সরেজমিনে আমখোলা গ্রামে ঝুমুরের বাবার বাড়ীতে গেলে সাংবাদিকদের দেখে তার বাবা-মা গা-ঢাকা দেয়। স্থানীয়রা জানান, বিগত দিনে ঝুমুর আক্তার অনেকের সাথে অবৈধ সম্পর্ক করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে। এমনকি তার বাবা অনৈতিক সম্পর্কের কারণে ধর্ষণ মামলার আসামী (পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালে মামলা চলমান, মামলা নম্বর ১৬৪/২০) ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক কীভাবে একই ব্যক্তিকে দুইটি নাগরিক সনদপত্র দেওয়া হলো জানতে চাইলে আমখোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান মনির বলেন, আমরা জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে নাগরিক সনদপত্র প্রদান করে থাকি।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে ঝুমুর আক্তার এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ০১৬৪২৪৪৪১০৯ নম্বরে একাধিকবার ফোন করলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ভুক্তভোগীরা ঝুমুর আক্তারের প্রতারণার কারণে অন্য কেউ যাতে আর সর্বশান্ত না হয় এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন এবং তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন তারা।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!